প্রকল্পের নাম |
মুক্তা চাষ প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণ |
|
প্রকল্প পরিচালকের নাম, পদবী ও ছবি |
ড. মোহসেনা বেগম তনু, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা |
![]() |
প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ঃ |
মুক্তা গবেষণা কেন্দ্র মোবা: 01711-115333 ইমেইল: tanubfri@yahoo.com |
|
প্রকল্প কোড: | 5012 | |
উদ্যোগী মন্ত্রণালয় |
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় |
|
বাস্তবায়নকারী সংস্থা |
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট |
|
প্রকল্প বাস্তবায়নকাল |
জুলাই ২০১২ - জুন ২০১৯ |
|
প্রকল্প ব্যয় (লক্ষ টাকা) |
মোট জিওবি প্রকল্প সাহায্য ১২৩৬.২৫ ১২৩৬.২৫ - |
|
প্রকল্পের অর্থায়ন |
জিওবি |
|
প্রকল্প এলাকা |
স্বাদুপানি কেন্দ্র, ময়মনসিংহ এবং সামুদ্রিক কেন্দ্র, কক্সবাজার |
|
প্রকল্পের উদ্দেশ্য |
|
|
প্রকল্পের পটভূমি |
মুক্তা একটি দুস্প্রাপ্য এবং মূল্যবান রত্ন। প্রাচীনকালে মুক্তা উৎপাদন কৌশল জানা ছিল না। তখন শুধুমাত্র প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত মুক্তাই সংগ্রহ করা হতো কিন্তু ঝিনুকে প্রাকৃতিকভাবে মুক্তা উৎপাদন হতো খুব কম পরিমাণে। যার ফলে শুধুমাত্র ধনীক শ্রেণীর পক্ষেই মুক্তা ব্যবহার করা সম্ভব হতো। পরবর্তীতে চীন এবং জাপানে মুক্তা উৎপাদন কৌশল উদ্ভাবিত হয় এবং মুক্তার বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। বর্তমানে শুধু ধনী শ্রেণী নয় মধ্যবিত্তের পক্ষেও মুক্তা ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে। চীনের উৎপাদিত স্বাদুপানির মুক্তা পৃথিবীর মোট ৯৫% এবং প্রায় ৮০০-১০০০ মে.টন এবং এর প্রায় অর্ধেকেই এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা এবং আমেরিকায় রপ্তানী হয়। গহনা তৈরি ছাড়াও মুক্তার অন্যান্য ব্যবহারও রয়েছে। মুক্তা চূর্ণে ১৭টি অ্যামাইনো এসিড এবং অন্যান্য খনিজ উপাদান রয়েছে যা বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় যেমন- হৃদরোগ, গলার ঘা, চোখের রোগে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও ত্বকের ক্রীমেও মুক্তা চূর্ণ ব্যবহৃত হয়। ঝিনুকের খোলস এবং ভেতরের নরম অংশেরও বাণিজ্যিক গুরুত্ব রয়েছে। ঝিনুক প্রাকৃতিক পানি শোধনকারী এবং পানির গুণাগুণ নির্দেশকও বটে। এছাড়াও মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণির খাদ্য হিসেবেও ঝিনুক ব্যবহৃত হয়। ঝিনুকের খোলস থেকে চুন, বোতাম, গহনা তৈরি এবং খোলস চূর্ণ পশু খাদ্যের উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়। স্বাদুপানির ঝিনুক থেকে মুক্তা উৎপাদনের ইতিহাস দু হাজার বৎসর পূর্বের হলেও বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ শুরু হয় উনিশ শতকের মধ্যভাগে। ছোট, অসমান আকৃতির রাইস পার্ল চীনের মোট উৎপাদনের সিংহ ভাগ হলেও মুক্তা বিজ্ঞানীদের ক্রমাগত প্রচেষ্টা এবং গবেষণার ফলে আশির দশকের মাঝামাঝি বড় আকৃতির বিভিন্ন রং এবং আকৃতির মুক্তা উৎপাদন সম্ভব হয়। বর্তমানে মুক্তা উৎপাদনের জন্য যে ঝিনুক ব্যবহৃত হয় তা ত্রিকোনাকৃতির Sail mussel (Hyriopsis cumingii)। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া এবং টেনেসি অঙ্গরাজ্যে মুক্তা উৎপাদনের জন্য কিছু কিছু ফার্ম গড়ে উঠেছে। মিসিসিপি নদীর Margrlifera sp. শেল bead তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয় এবং চীন ও জাপানে ব্যাপকভাবে রপ্তানী হয়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহ বিশেষত ইন্ডিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন এবং ভিয়েতনামেও মুক্তা চাষ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে ঝিনুক থেকে মুক্তা আহরণ করা হয়ে থাকে। মুক্তাবাহী ঝিনুকের উপস্থিতি এবং ঝিনুকে মুক্তার অস্তিত্ব প্রমাণ করে যে দেশের জলাশয়, আবহাওয়া তথা পারিপার্শ্বিক অবস্থা মুক্তা চাষের সহায়ক। বিশ্ববাজারে মুক্তার যথেষ্ট কদর রয়েছে। অন্যদিকে, প্রকৃতি থেকে মুক্তা আহরণের মাধ্যমে প্রতি বছর অসংখ্য ঝিনুক বিনষ্ট করে মৎস্য জীববৈচিত্রকে ধ্বংস করা হচ্ছে। তাই গবেষণা দ্বারা প্রণোদিত উপায়ে মুক্তা চাষের প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে বিশ্ববাজারে চাহিদা মতো মুক্তা সরবরাহ করে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ এবং ঝিনুকের জীববৈচিত্র সংরক্ষণ করা আবশ্যক । এপ্রেক্ষিতে বাণিজ্যিকভাবে মুক্তা উৎপাদনের নিমিত্ত এবং ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত মুক্তা উৎপাদন প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে ১২৩৬.২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে জুলাই ২০১২- জুন ২০১৯ মেয়াদে “মুক্তা চাষ প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণ” শীর্ষক প্রকল্পটি প্রণয়ন করা হয়েছে। |