Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

এক নজরে বিএফআরআই

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট

www.fri.gov.bd

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) দেশের মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে গবেষণা পরিচালনার জন্য একমাত্র জাতীয় প্রতিষ্ঠান। ইনস্টিটিউটের সদর দপ্তর ময়মনসিংহে অবস্থিত। ইনস্টিটিউটের গবেষণা কার্যক্রম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত ৫টি কেন্দ্র ও ৫টি উপকেন্দ্র হতে পরিচালিত হয়ে থাকে। গবেষণা কেন্দ্রগুলো হচ্ছে- স্বাদুপানি কেন্দ্র, ময়মনসিংহ, নদী কেন্দ্র, চাঁদপুর, লোনাপানি কেন্দ্র, পাইকগাছা, খুলনা, সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্র, কক্সবাজার এবং চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্র, বাগেরহাট। উপকেন্দ্র ৫টি হচ্ছে নদী উপকেন্দ্র, রাঙ্গামাটি, প্লাবনভূমি উপকেন্দ্র, সান্তাহার, বগুড়া, স্বাদুপানি উপকেন্দ্র, যশোর, নদী উপকেন্দ্র, খেপুপাড়া, পটুয়াখালী এবং স্বাদুপানি উপকেন্দ্র, সৈয়দপুর, নীলফামারী। ইনস্টিটিউট দেশের মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে জাতীয় চাহিদার নিরীখে গবেষণা পরিচালনা করে এ যাবত ৬০টি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এরমধ্যে ৪৯টি মাছের প্রজনন, জীনপুল সংরক্ষণ, জাত উন্নয়ন ও চাষাবাদ বিষয়ক এবং অপর ১১টি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক। এসব প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণের ফলে দেশে মাছের উৎপাদন উলেলখ্যযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্ঠি হয়েছে।

 

রূপকল্প (Vision)

দেশের মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে জাতীয় চাহিদার নিরীখে গবেষণা পরিচালনা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন।

 

অভিলক্ষ্য (Mission)

গবেষণালব্ধ প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে দেশে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি আমিষের চাহিদা পূরণ, গ্রামীণ জনগোষ্ঠির কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধি।

 

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

  • দেশের মিঠাপানি ও সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের সার্বিক উন্নয়ন ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মৌলিক ও প্রয়োগিক গবেষণা পরিচালনা এবং সমন্বয় সাধন।
  • গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠির আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে স্বল্প ব্যয় ও স্বল্প শ্রমনির্ভর পরিবেশ উপযোগী উন্নত মৎস্যচাষ ও ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি উদ্ভাবন।
  • মৎস্য বাণিজ্যিকীকরণ সহায়ক বহুমুখী মৎস্যজাত পণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, মান নিয়ন্ত্রণ ও বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন বিষয়ক গবেষণা পরিচালনা।
  • চিংড়িসহ অন্যান্য অর্থকরী জলজ সম্পদের উন্নয়নে যথাযথ প্রযুক্তি উদ্ভাবন।
  • প্রযুক্তি হস্তান্তরের লক্ষ্যে প্রযুক্তিভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান ও গবেষণা ক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি গঠন।
  • মৎস্যসম্পদ উন্নয়ন নীতি প্রণয়নে সরকারকে পরামর্শ প্রদান।

 

প্রধান কার্যাবলী

  • জাতীয় চাহিদার নিরীখে মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণা পরিচলানা।
  • মাছের জাত উন্নয়ন, জলজ জীববৈচিত্র সংরক্ষণ এবং বিজ্ঞানভিত্তিক মাছ চাষ ও ব্যবস্থাপনা কৌশল উদ্ভাবন।
  • অভ্যমত্মরীণ উম্মুক্ত জলাশয়ে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যবস্থাপনা কৌশল উদ্ভাবন।
  • সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের সহনশীল আহরণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্থায়ীত্বশীল ও টেকসই ব্যবস্থাপনা কৌশল উদ্ভাবন।
  • মৎস্যজাত পণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, মান নিয়ন্ত্রণ ও বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন বিষয়ক গবেষণা পরিচালনা।
  • প্রযুক্তি হসত্মামত্মরে সম্প্রসারণ কর্মী, উদ্যোক্তা ও অগ্রসরমান চাষীদের কারিগরী প্রশিক্ষণ প্রদান।
  • গবেষণা ক্ষেত্রে মানবসম্পদ উন্নয়ন।
  • মৎস্যসম্পদ উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে নীতি প্রণয়নে সরকারকে প্রয়োজনীয় পরমার্শ প্রদান।

 

ইনস্টিটিউটের ব্যবসহাপনা

জনবল

ইনস্টিটিউট বর্তমান জনবল ৪৫৭ জন। এর মধ্যে ৯ম-২য় গ্রেডের পদ সংখ্যা ১৬২ এবং ২০-৮ম গ্রেডের পদ সংখ্যা ২৯৫ জন।

গবেষণা সাফল্য

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট বিগত ৮ বছরে গবেষণা ক্ষেত্রে উলেলখযোগ্য অগ্রগতি ও সফলতা অর্জন করেছে। অর্জিত কয়েককটি সফলতার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নিন্মে দেয়া হলোঃ

বিপন্ন প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদন ও জীনপুল সংরক্ষণ

 

আইইউসিএন (২০১৫) এর হিসাব মতে আমাদের দেশে ২৬০ প্রজাতির মিঠাপানির মাছের মধ্যে ৬৪ প্রজাতির মাছ বিলুপ্তপ্রায়। আমাদের ঐতিহ্যের অংশ মিঠাপানির এসব সুস্বাদু মাছকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার্থে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট তার জন্মলগ্ন থেকেই গবেষণা পরিচালনা করে আসছে। গবেষণা পরিচালনার মাধ্যমে ইনস্টিটিউট এ পর্যমত ১৮টি বিপন্ন প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদন ও চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে। প্রজাতিসমুহ হচ্ছেঃ টেংরা, গুতুম, পাবদা, গুলশা, মেনি, ফলি, দেশী সরপুঁটি, কৈ, শিং, মাগুর, গুজি আইড়, বাটা, ভাগনা, গনিয়া, কালবাউস, মহাশোল, চিতল এবং কুচিয়া।

 

বর্তমানে বাংলদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৈ, শিং, মাগুর, দেশী পুঁটি, বাটা, পাবদা, গুলশা, টেংরা, ফলি ইত্যাদি মাছের পোনা উৎপাদন ও চাষাবাদ করা হচ্ছে এবং এতে অনেক হ্যাচারি মালিক, মৎস্য চাষী ও উদ্যোক্তা লাভবান হচ্ছেন। সুনির্দিষ্টভাবে, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের কারিগরি সহায়তায় বিলুপ্তপ্রায় এসব মৎস্য প্রজাতির ছোট-বড় অনেক হ্যাচারি ও খামার গড়ে উঠেছে। তাছাড়া, ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ব্যবহার করে কুমিললা, যশোর, বগুড়া, রংপুর, সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাবদা, গুলশা, কৈ, শিং, মাগুর, টেংরা মাছের ব্যাপক পোনা উৎপাদিত হচ্ছে। এ সমস্ত হ্যাচারি থেকে উৎপাদিত পোনা দেশব্যাপী ব্যবহার করা হচ্ছে। পোনা প্রাপ্তি সহজ হওয়ায় অনেক চাষী বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ফলস্রুতিতে বাজারে বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রাপ্যতা সাম্প্রতিককালে বৃদ্ধি পেয়েছে যা দেশের মোট মৎস্য উৎপাদন ও পুষ্টি চাহিদা পুরণে  গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমাদের খাবার টেবিলে পুনরায় ফিরে আসছে প্রায় হারিয়ে যাওয়া এসব মূল্যবান মাছ। এতে দেশীয় মাছের পোনা উৎপাদন, চাষ ও বিপণন কার্যক্রমে জড়িত বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ বিশেষ করে প্রামিতক জনগোষ্ঠির আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।

 

রুই মাছের উন্নত জেনেটিক জাত উদ্ভাবন 

 

ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা জেনেটিক গবেষণার মাধ্যমে ২০০৯ সালে দেশীয় রুই মাছের নতুন উন্নত জাত উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন নদী উৎস থেকে রুই মাছের বন্যজাত(wild) সংগ্র্রহ করে ক্রস ব্রিডিং পদ্ধতিতে প্রথম প্রজন্মের উন্নত রুই জাত উদ্ভাবন করা হয় যা বিদ্যমান জাত হতে ১৬ ভাগ অধিক উৎপাদনশীল। অধিক উৎপাদনশীল এসব মাছের জাত দেশব্যাপী সম্প্রসারণ করা হলে দেশে অতিরিক্ত ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন মাছের উৎপাদন পাওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়। এ জাত উদ্ভাবনের জন্য ইনস্টিটিউটকে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০১০ স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।

 

কুচিয়ার পোনা উৎপাদন ও চাষ ব্যবস্থাপনা

 

কুচিয়া মাছ অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ ও ঔষধি গুণসম্পন্ন। আন্তর্জাতিক বাজারে এর যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে কুচিয়ার চাহিদা থাকায় কুচিয়ার উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য ইনস্টিটিউট গবেষণা পরিচালনা করছে। ইনস্টিটিউটে ২০১৫ সালে নিয়ন্ত্রিত প্রজননের মাধ্যমে কুচিয়ার পোনা উৎপাদনে সফলতা অর্জিত হয়েছে। কুচিয়ার পোনা উৎপাদনের ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে নির্বিচারে কুচিয়ার আহরণ হ্রাস পেয়েছে এবং চাষাবাদ সহজতর হয়েছে।

 

কৈ মাছের রোগ প্রতিরোধে ভেকসিন তৈরি

 

দেশে ভিয়েতনামী কৈ মাছের চাষ গত ৪/৫ বছরে ব্যাপক  জনপ্রিয় হয়ে উঠে। অধিক মুনাফার আশায় কতিপয় চাষী অধিক ঘনত্বে  (৩-৫ হাজার/শতক) কৈ মাছ পুকুরে চাষ করে। ফলে পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়ে কৈ মাছের ব্যাপক মড়ক দেখা দেয়। অত:পর ২০১৪ সাল থেকে পরিচালিত গবেষণায় কৈ মাছের রোগের কারণ হিসেবে Streptococius agalactiae নামক ব্যাকটেরিয়াকে সনাক্ত করা হয়েছে এবং এ জীবাণু দমনে ইতোমধ্যে ইনস্টিটিউট থেকে ভেকসিন তৈরিতে সফলতা অর্জিত হয়েছে। উদ্ভাবিত এই ভেকসিন শীঘ্রই চাষীদের নিকট সহজলভ্য করা সম্ভব হবে। কৈ মাছের ভেকসিন তৈরি দেশ-বিদেশে এটাই প্রথম।

 

মিঠা পানির ঝিনুকে ইমেজ মুক্তা উৎপাদন

 

গবেষণার মাধ্যমে ইনস্টিটিউট হতে মিঠাপানির ঝিনুকে (Lamellidens marginalis এবং L. corrianus) ইমেজ মুক্তা তৈরির কৌশল উদ্ভাবন করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ৭-৮ মাসেই ঝিনুকে ১টি পুর্ণাঙ্গ ইমেজ মুক্তা তৈরী করা সম্ভব। সাধারণত মোম, খোলস, পলৎস্টিক, ষ্টীল ইত্যাদি দিয়ে চাহিদা মাফিক তৈরিকৃত নকশাকে ঝিনুকের ম্যান্টাল টিস্যুর নিচে স্থাপন করে ইমেজ মুক্তা তৈরী করা হয়। ইমেজ মুক্তা উৎপাদনের পাশাপাশি দেশীয় ঝিনুকে (৬০-৭০ গ্রাম) নিউক্লি অপারেশনের মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত কম সময়ে (৮-৯ মাস) বড় ও গোলাকৃতির  মুক্তা উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। অপরদিকে ২০১৬ সালে বিদেশ থেকে সংগৃহীত বড় আকৃতির মুক্তা উৎপাদনকারী ঝিনুক (৭০০-৮০০ গ্রাম) পুকুরে লালন-পালন করা হচ্ছে এবং প্রজননের মাধ্যমে এর পোনা উৎপাদনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সংগৃহীত বিদেশী ঝিনুকের সংখ্যা বৃদ্ধির পর বড় আকৃতির এই ঝিনুকে মুক্তা উৎপাদনের  কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

 

হালদা নদীতে রুই জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র সংরক্ষণ ব্যবসহাপনা

 

হালদা নদী রুই জাতীয় মাছের একমাত্র প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র। এ নদীতে উৎপন্ন পোনা ব্রুড উৎপাদনসহ মাছ চাষে ব্যবহৃত হয়। বিগত বছরগুলোতে প্রাকৃতিক, মানবসৃষ্ট এবং পানি দূষণের কারণে হালদা নদী হতে মাছের নিষিক্ত ডিম উৎপাদনের পরিমান দিন দিন হৃাস পেয়েছে। উলেলখিত কারণে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট হালদা নদীর পরিবেশ, প্রতিবেশ, পানির গুণাগুণ ও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার প্রভাব নির্ণয়ের লক্ষ্যে গবেষণা পরিচালনা করে। গবেষণায় প্রতীয়মান হয়েছে যে, রুই জাতীয় মাছের বিশুদ্ধ পোনা প্রাপ্তি তথা প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র সংক্ষণের স্বার্থে হালদা নদীতে সারা বছর পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে  ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রণীত বেশ কিছু সুপারিশ বর্তমানে সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন আছে।

 

ইলিশ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণে ষষ্ঠ অভয়াশ্রম চিহ্নিতকরণ

 

জাতীয় মাছ ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণে অভয়াশ্রম স্থাপনের উদ্দেশ্যে ইনস্টিটিউটের  নদী কেন্দ্র, চাঁদপুর হতে বিগত পাঁচ বছর ধারাবাহিক গবেষণা পরিচালনা করা হয়। গবেষণায় নদীতে জাটকার প্রাচুর্যতা, পানির গুণাগুণ ও পানির পলূৎংটন (খাদ্যকণা) এর প্রাচুর্যতার ভিত্তিতে ষষ্ঠ অভয়াশ্রম চিহ্নিত করা হয়েছে। চিহ্নিত এলাকাসমূহ হচ্ছে বরিশাল জেলার হিজলা উপজেলার নাছাকাটি পয়েন্ট, হরিনাথপুর পয়েন্ট ও ধুলখোলা পয়েন্ট এবং মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ভাষানচর পয়েন্ট এবং বরিশাল সদর উপজেলার জুনাহার পয়েন্ট। এর মোট এলাকা হচ্ছে প্রায় ৮২ কিলোমিটার। উক্ত এলাকায় ইলিশ/জাটকার ৬ষ্ঠ অভয়াশ্রম বাস্তবায়ন করা গেলে বছরে প্রায় ৪,৩০০ কোটি অতিরিক্ত জাটকা ইলিশ জনতায় (Hilsa population) যুক্ত হবে বলে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন ।

 

উপকূলীয় জলাশয়ে নোনা টেংরা ও পারশে মাছের পোনা উৎপাদন ও চাষ সম্প্রসারণ

 

ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা খুলনা জেলার পাইকগাছাস্থ লোনাপানি কেন্দ্রে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে নোনা টেংরা ও পারশে মাছের ব্যাপক পোনা উৎপাদনে সফলতা অর্জন করেছে। এই ২টি মাছের কৃত্রিম প্রজনন এবং পোনা উৎপাদনের ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে এদের চাষাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। নোনা টেংরা মাছের প্রজনন কৌশল উদ্ভাবনের জন্য ইনস্টিটিউট জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০০৯ স্বর্ণপদক লাভ করে। উলেলখ্য, উপকূলীয় ঘেরে চিংড়ি মাছের বিভিন্ন রোগবালাই হওয়ায় চাষীরা মাঝেমধ্যে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এক্ষেত্রে  চিংড়ির সাথে নোনা টেংরা/পারশে মাছের মিশ্র চাষ করা হলে ক্ষতি পুষিয়ে আনা সম্ভব হবে।

 

হ্যাচারিতে কাঁকড়ার পোনা উৎপাদন

 

প্রাকৃতিক পরিবেশে জোয়ার-ভাটা বিধৌত প্যারাবন সমৃদ্ধ মোহনা এলাকা কাঁকড়ার আবাসস্থল। পরিপক্ক স্ত্রী কাঁকড়া ডিম ও পোনা ছাড়ার জন্য গভীর সমুদ্রে পরিব্রাজন করে বিধায় হ্যাচারিতে পোনা উৎপাদনের জন্য ডিম বহনকারী বা মা কাঁকড়া পাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য। ইনস্টিটিউটের পাইকগাছাসহ লোনাপানি কেন্দ্রে পর্যায়ক্রমিক গবেষণার মাধ্যমে পরিপক্ক মা (gravid) কাঁকড়া হতে প্রজনন উপযোগী ডিম বহনকারী (berried) মা কাঁকড়া উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। এক্ষেত্রে, ৩০ পিপিটি মাত্রার লবণ পানি ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ৬৯% berried কাঁকড়া উৎপাদিত হয়েছে, যাদের ডিম নিষিক্তের হার গড়ে ৯৩% এবং পোনা উৎপাদনের সাফল্য ৯৮% পর্যমত পাওয়া গেছে। উলেলখ্য, হ্যাচারিতে কাঁকড়ার পোনা মৃত্য হার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বর্তমান গবেষণা অব্যাহত আছে।

 

উপকূলে সী-উইড চাষ

 

ইনস্টিটিউটের কক্সবাজারস্থ সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্র থেকে পুষ্টিমান সমৃদ্ধ এবং বাণিজ্যিক গুরুত্বসম্পন্ন সী-উইডের চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে গবেষণা পরিচালনা করা হচ্ছে।  গবেষণা পর্যবেক্ষণে কক্সবাজারস্থ সেন্টমার্টিন দ্বীপ, বাকখালী মোহনা ও টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে এ পর্যমত প্রায় ৬০ প্রজাতির সী-উইডের  সন্ধান পাওয়া গেছে, এরমধ্যে ১০ প্রজাতির সী-উইডকে বাণিজ্যিক গুরুত্বসম্পন্ন বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। অত:পর  ৩ প্রজাতির (Sargassum oligocystum, Caularpa racemosa ও  Hypnea spp.) সী-উইড সেন্টমার্টিন দ্বীপ, ইনানী ও বাকখালীতে horizontal net ব্যবহার করে চাষ করা হয়। মোট ৬০ দিনের চাষে প্রতি বর্গমিটারে সর্বোচ্চ ১ কেজি পর্যমত সী-উইড উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু সেন্টমার্টিন দ্বীপ নয় উপকূলের সুবিধাজনক সহানে সী-উইড চাষ করা সম্ভব। যেকোন খাদ্যে পরিমিত পরিমাণ সী-উইডের পাউডার বা সিদ্ধ করা তরল নির্যাস ব্যবহার করে খাদ্যের (স্যুপ, সালাদ, নুডুলস ইত্যাদি) পুষ্টিমান বৃদ্ধি করা যেতে পারে।

 

‘‘বিএফআরআই মেকানিক্যাল ফিশ ড্রায়ার’’ ব্যবহারের মাধ্যমে গুণগতমানসম্পন্ন শুটকি মাছ উৎপাদন

 

স্ব^াস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ শুটকি তৈরীর লক্ষ্যে ইনস্টিটিউটের সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্র, কক্সবাজার কর্তৃক সময় সাশ্রয়ী ও দীর্ঘদিন ব্যবহার উপযোগী ‘‘বিএফআরআই মেকানিক্যাল ফিশ ড্রায়ার’’ উদ্ভাবন করা হয়েছে। ড্রায়ারটিতে সৌর ও বিদ্যুৎ শক্তি উভয়ই ব্যবহার করা যায়। ফিশ ড্রায়ারের মূল কাঠামো মেটালিক যা জিআই পাইপ/এংগেল বা এসএস-বারএর তৈরি। এর একদিকে বাতাস প্রবেশের জন্য ছোট মেশের জালের দরজা ও অন্য দিকে বাতাস বের হওয়ার জন্য এক বা একাধিক লাগানো থাকে। জালের দরজা ছাড়া কাঠামোর সকল পাশে ৯ মিমি. পুরুত্বের স্বচ্ছ সেলুলয়েড পলিথিন লাগানো। রাতে বা মেঘলা দিনে মাছ শুকানোর জন্য এই ড্রায়ারে হট এয়ার ফ্যান বা হিটিং কয়েল স্থাপন করা হয়। স্বচ্ছ সেলুলয়েডের মধ্য দিয়ে সূর্য কিরণ ড্রায়ারে প্রবেশ করে ও পাটাতনের কালো অংশে শোষিত হয়ে তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয় যা ভেতরের বাতাসকে গরম করে। এই গরম বাতাস ফ্যানের মাধ্যমে মাছের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দ্রুত মাছ শুকিয়ে যায়। নিরাপদ শুটকি তৈরিতে অনেক উদ্যোক্তা বর্তমানে এই ড্রয়ার ব্যবহার করছে।

 

ইনস্টিটিউটে উন্নয়নে প্রকল্প বাস্তবায়ন

 

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি, গ্র্রামীণ কর্মসংস্থান, পুষ্টি চাহিদা পূরণ ও বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনের জন্য বর্তমান মৎস্যবান্ধব সরকারের আমলে অর্থ্যাৎ বিগত ৮ বছরে ইনস্টিটিউটে ৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ সমাপ্ত হয়েছে এবং ৩টি উন্নয়ন প্রকল্প বর্তমানে চলমান রয়েছে। এসব উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ইনস্টিটিউটের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং আধুনিক বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয়সহ গবেষণা জোরদার করা সম্ভব হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নিন্মে দেয়া হলোঃ

 

বাগেরহাট জেলায় চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পঃ চিংড়ির উৎপাদন বৃদ্ধি, রোগ নির্ণয় ও প্রতিকার এবং চিংড়িজাত পণ্যের গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে গবেষণার মাধ্যমে উপযুক্ত প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য ২,২৬৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বাগেরহাটে একটি আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী  ২০১১ সালে কেন্দ্রটি উদ্বোধন করেন। উক্ত কেন্দ্রে LC-MS-MS, GC-MS, PCR সহ অন্যান্য আধুনিক গবেষণা যন্ত্রপাতি রয়েছে।

 

জাটকা সংরক্ষণের মাধ্যমে ইলিশ সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পঃ ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি সম্পর্কিত গবেষণা পরিচালনা এবং গবেষণাগার আধুনিকায়নের জন্য ৪৯২.২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ইনস্টিটিউটের চাঁদপুরস্থ নদী কেন্দ্রে ‘জাটকাসংরক্ষণ, জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান এবং গবেষণা প্রকল্প (বিএফআরআই অংশ)’ শীর্ষক একটি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ‘এমভি রূপালী ইলিশ’ নামে একটি আধুনিক গবেষণা জাহাজ ক্রয় করা হয়েছে। উক্ত জাহাজ ব্যবহারের মাধ্যমে ইলিশ গবেষকগণ বড় বড় নদ-নদী ও মোহনা অঞ্চলে গবেষণা পরিচালনায় সক্ষমতা অর্জন করেছেন। ফলে গবেষণা পরিচালনার মাধ্যমে চাঁদপুর ও শরিয়তপুর জেলার মধ্যবর্তী স্থানে মেঘনা ও পদ্মা নদীর মিলনস্থলে ২০ কিমি. এলাকাকে ইলিশের ৫ম অভয়াশ্রম  এবং বরিশাল জেলার হিজলা ও মেহিন্দিগঞ্জ উপজেলার ৮২ কিলোমিটার নদী এলাকাকে ৬ষ্ঠ অভায়শ্রম হিসেবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। জাটকা রক্ষা, ভরা প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ বন্ধ রাখা, অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা এবং জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ফলে বিগত দশকের তুলনায় ইলিশের প্রাকৃতিক প্রজনন সাফল্য ৩৫ গুণ এবং জাটকার প্রাচুর্য ১৪৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ইলিশের বর্তমান উৎপাদন ৫ লক্ষ মে.টন ছাড়িয়ে গেছে।

 

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনমিটটিউটের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পঃ ইনস্টিটিউটের নদী কেন্দ্রসহ অন্যান্য কেন্দ্র ও উপকেন্দ্রে  বিদ্যমান অবকাঠামো সংস্কার এবং উন্নয়নে  ৩,৯৪৩.২৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আলোচ্য উন্নয়ন প্রকল্পটি ২০১০ থেকে ২০১৫ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হয়। উক্ত প্রকল্পের আওতায় আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়েছে। ফলে ইনস্টিটিউটের অবকাঠামোগত ও গবেষণা সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

জলজ পরিবেশ ও উৎপাদনশীলতার উপর মৎস্যচাষে ব্যবহূত ড্রাগস ও কেমিকেলস এর ক্ষতিকর প্রভাব নির্ণয় প্রকল্পঃ মাছ চাষে ব্যবহৃত বিভিন্ন ড্রাগস ও কেমিক্যালস এর তালিকা প্রণয়ন, উৎস সনাক্তকরণ এবং জলজ পরিবেশের ওপর রাসায়নিক দ্রব্যাদির ক্ষতিকর প্রভাব  নির্ণয়ে ১,৬১৭.৭৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৫ বছর মেয়াদে আলোচ্য উন্নয়ন প্রকল্পটি ইনস্টিটিউট থেকে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে মৎস্যচাষে ব্যবহত ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যাদি সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া গেছে এবং এ বিষয়ে চাষীদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা হয়েছে।

 

ইন্টিগ্রে্রটেড এগ্রি্রকালচারাল প্রোডাক্টিভিটি প্রকল্প (আইএপিপি- বিএফআরআই কম্পোনেন্ট)ঃ কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাথে যৌথভাবে উক্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। পাঁচ বছর মেয়াদে বাস্তবায়িত উক্ত কম্পোনেন্ট এর প্রকল্প ব্যয় ছিল ১,৩৪৬.১৬ লক্ষ টাকা। উক্ত প্রকল্পের আওতায় রংপুর ও বরিশাল বিভাগে ৮টি জেলার ৫৪টি উপজেলায় নির্বাচিত হ্যাচারি অপারেটরদের মাঝে তেলাপিয়া, কৈ ও পাঙ্গাস মাছের উন্নত জার্মপ্লাজম বিতরণ করা হয়েছে ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে মাছ চাষকে জনপ্রিয় করা  হয়েছে।

 

কাপ্তাই লেকে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি, সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা জোরদারকরণ  (কম্পোনেন্ট-সি, বিএফআরআই অংশ) প্রকল্প ঃ কাপ্তাই লেকে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি, মাছ ধরা নিষিদ্ধকালীন সময়ে বিকল্প চাষাবাদ পদ্ধতির উন্নয়ন, লেকের উৎপাদনশীলতা নিরূপণ এবং সর্বোপরি জলাশয়ের টেকসই ও স্থায়িত্বশীল ব্যবস্থাপনা কৌশল উদ্ভাবনে আলোচ্য প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। এর বাজেট বরাদ্দ ছিল ৪৮৬.০০ লক্ষ টাকা। আলোচ্য প্রকল্পের আওতায় লেকে  খাঁচায় ও ক্রীকে মাছ চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। লেকের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এসব প্রযুক্তি বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাছাড়া, উক্ত প্রকল্পের আওতায় রাঙ্গামাটিতে ইনস্টিটিউটের নদী উপকেন্দ্রের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত অফিস কাম গবেষণাগার নির্মাণ করা হয়েছে।

 

মুক্তাচাষ প্রযুক্তি উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পঃ দেশে বাণিজ্যিক সম্ভাবনাময় টেকসই মুক্তাচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের লক্ষ্যে গবেষণা পরিচালনার নিমিত্ত ১,২৩৬.২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৫ বছর মেয়াদে আলোচ্য প্রকল্পটি ইনস্টিটিউটে চলমান রয়েছে। উক্ত প্রকল্পের আওতায় বিদেশে প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা  মুক্তা তৈরির সঠিক কৌশল ইতোমধ্যে আয়ত্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। গবেষণায় একটি ঝিনুক থেকে সবের্বাচ্চ ১২টি মুক্তা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। তাছাড়া, ঝিনুকে ইমেজ মুক্তা উৎপাদনে ইতোমধ্যে সফলতা অর্জিত হয়েছে। বর্তমানে বিদেশ থেকে সংগ্রহীত বড় আকৃতির ঝিনুকের পোনা উৎপাদনের ওপর গবেষণা চলমান আছে। উক্ত প্রকল্পের আওতায় ময়মনসিংহস্থ ইনস্টিটিউটের স্বাদুপানি কেন্দ্রের ক্যাম্পাসে অধুনিক যন্ত্রপাতিসহ মুক্তা গবেষণাগার নির্মাণ করা হয়েছে।

 

বাংলাদেশের নির্বাচিত এলাকায় কুচিয়া ও কাঁকড়ার চাষ এবং গবেষণা প্রকল্প (বিএফআরআই অংশ)ঃ কাকঁড়া ও কুচিয়ার আমর্ত্মজাতিক বাজারে যথেষ্ট মূল্য থাকায় তা অনুবাধন করে ৩ বছর মেয়াদে ১,৩৮৬.৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ইনস্টিটিউটের ১ টি গবেষণা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। উক্ত প্রকল্পের আওতায় কাঁকড়া ও কুচিয়ার পোনা উৎপাদন ও চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের লক্ষ্যে ইনস্টিটিউটে গবেষণা চলমান রয়েছে। উলেলখ্য, ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে কুচিয়ার পোনা উৎপাদনে সফলতা অর্জিত হয়েছে। কাঁকড়ার পোনা উৎপাদনেও প্রাথমিক সফলতা অর্জিত হয়েছে।

 

সার্পোট টু সাসটেইনেবল ম্যানেজমেন্ট অব দা বে অব বেঙ্গল লার্জ মেরিন ইকোসিস্টেম প্রকল্পঃ বঙ্গোপসাগরে মৎস্যসম্পদের অতি আহরণ, পরিবেশ বিপর্যয়, দূষণ ইত্যাদি সমস্যা সমাধানসহ এর যথাযথ উন্নয়নের জন্য GEF ও অন্যান্য দাতা সংস্থার অর্থায়নে Sustainable Management of the BOBLME (Bay of Bengal Large Marine Ecosystem) শীর্ষক আলোচ্য কারিগরি সহায়তা প্রকল্পটি বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী ৭ টি দেশের সাথে বাংলাদেশ বান্তবায়ন করেছে। Co-financing ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশে ১৪৮.৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প হতে এতদঞ্চলের মানুষের দারিদ্রতা হ্রাস ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি সমন্বিত Strategic Action Plan (SAP) প্রণয়ন করা হয়েছে।

 

ইমপেক্ট এসেসম্যান্ট অব আপস্ট্রিম ওয়াটার উইথড্রল টু কনজার্ভ ন্যাচারাল ব্রিডিং হ্যাবিটেট অব মেজর কার্পস ইন দি রিভার হালদা প্রকল্পঃ বাংলাদেশের কার্প জাতীয় মাছের একমাত্র প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী । এই নদীর পোনা হ্যাচারিতে মা মাছ তৈরি ও চাষাবাদে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু, নদীতে পানি প্রবাহ হ্রাস, পানি দূষণ এবং মানব  সৃষ্ট নানাবিধ কারণে সাম্প্রতিককালে মাছের প্রজনন মারাত্নকভাবে ব্যাহত হয়। এসব বিষয়ে গবেষণা পরিচালনার জন্য Impact Assessment on  Upstream Water Withdrawal to Conserve Natural Breeding Habitat of Major Carps in the River Halda  শিরোণামে ২০০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ইনস্টিটিউট থেকে একটি প্রকল্প       বাস্তবায়ন করা হয়। গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে হালদা নদীতে কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন ক্ষেত্রের উন্নয়ন ও প্রজনন অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে সুপারিশমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রণীত সুপারিশমালার আলোকে স্বল্প মেয়াদি ও দীর্ঘ মেয়াদি এ্যাকশন পলূৎন প্রণয়ন করা হয়েছে। এসব এ্যাকশন পলূৎন বাস্তবায়নের করা হলে হালদা নদীকে কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে পূনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে। 

 

ইনস্টিটিউটে চলমান উন্নয়ন প্রকল্প

  • মুক্তাচাষ প্রযুক্তি উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পঃ ১,২৩৬.২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৫ বছর মেয়াদের প্রকল্প।
  • চাঁদপুরের নদী কেন্দ্রে ইলিশ গবেষণা জোরদারকরণ প্রকল্পঃ ৩,৩৫৩.০০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৪ বছর মেয়াদের প্রকল্প।
  • বাংলাদেশে ঝিনুক ও শামুক সংরক্ষণ, পোনা উৎপাদন এবং চাষ প্রকল্পঃ ১,১৩০.০০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৪ বছর মেয়াদের প্রকল্প।
  • সামুদ্রিক মৎস্য গবেষণা জোরদারকরণ ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পঃ ৪,৯৩০.৭২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৫ বছর মেয়াদের প্রকল্প।
  • বাংলাদেশ উপকূলে সীউইড চাষ এবং সীউইডজাত পণ্য উৎপাদন গবেষণা প্রকল্পঃ ১৬৮৬.০০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৪ বছর মেয়াদের প্রকল্প।

 

বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (APA) বাস্তবায়ন

গত ২০.০৬.২০১৭ তারিখে মন্ত্রণালয়ের সাথে ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ সালের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং ১৫.০৬.২০১৭ তারিখে ইনস্টিটিউটের সাথে এর অধীনস্থ ৫টি কেন্দ্রের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী গবেষণা কার্যক্রম বর্তমানে চলমান রয়েছে। তাছাড়া, ২০১৬ সালে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী ইনস্টিটিউটের বাস্তবায়ন অগ্রগতি সমেতাষজনক।

 

(SDG) অর্জনের অগ্রগতি

 

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (Sustainable Development Goal- SDG) অর্জনে ইনস্টটিউট গবেষণা পরিচালনা করছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন নিশ্চিতকল্পে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (APA) অনুযায়ী গবেষণা চলমান রয়েছে। SDG লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ইনস্টিটিউট হতে বিপন্ন প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদন ও জীনপুল সংরক্ষণ, ইলিশসহ নদীর অন্যান্য বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ মাছের সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা, কাঁকড়া, কুচিয়া, শামুক-ঝিনুকসহ অপ্রচলিত জলজ প্রাণির প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র সংরক্ষণ এবং উৎপাদন কৌশল উদ্ভাবন, পরিবেশবান্ধব চিংড়ি চাষ ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও চাষ ব্যবস্থাপনা, সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের মজুদ নির্ণয় ও টেকসই ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির উন্নয়ন, পুষ্টিমান সমৃদ্ধ সী-উইড চাষ এবং সামুদ্রিক মাছ হতে মূল্য সংযোজিত (Value added) পণ্য তৈরির প্রযুক্তি উদ্ভাবন ইত্যাদি বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা করা হচ্ছে।

 

সুনীল অর্থনীতি বিষয়ক কর্মপরিকল্পনা

 

ক. স্বল্প-মেয়াদী কর্ম কৌশল

ক্র নং

কার্যক্রম

কার্যক্রমের বিবরণ

বাসত্মবায়ন সময়

বঙ্গোপসাগরের ১,১৮,৮১৩ বর্গ কিমি. এলাকায় মৎস্যসম্পদের প্রজাতি, জীববৈচিত্র, মজুদ, বিস্তৃতিসহ অন্যান্য সমুদ্রবিদ্যা বিষয়ক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা কৌশল নির্ধারণ।

চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে Cataloging marine fisheries resources of Bangladesh শীর্ষক গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে মাছ ও চিংড়ির প্রজাতি সনাক্তকরণ এবং জীববৈচিত্র ও বিস্তৃতি নিরুপন।

 

২০১৮-২০১৯

চিংড়ি  ও সামুদ্রিক মাছের প্রজনন সময়ে মাছ/চিংড়ি আহরণ বন্ধ রাখার নিমিত্ত  মাছ ও চিংড়ি প্রজাতির সঠিক প্রজননকাল নির্ধারণ।

Investigation on the spawning season of commercially important marine fishes of the Bay of Bengal, Bangladesh coast শীর্ষক গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে মাছ ও চিংড়ির প্রজাতির প্রজননকাল নির্ধারণে প্রজনন বিষয়ক সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত বিশেলষণ এবং গবেষণাপূর্বক সময়কাল নির্ধারণ।

২০১৮-২০২০

বঙ্গোপসাগরের উপকূল ও সুন্দরবন এলাকায় মৎস্যসম্পদের প্রজাতি, জীববৈচিত্র, মজুদ, বিস্তৃতিসহ অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা কৌশল নির্ধারণ।

শেরে ই বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে

Cataloging coastal fisheries resources of Bangladesh using DNA barcoding শীর্ষক গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগর উপকূল ও সুন্দরবনের মাছ ও চিংড়ির প্রজাতি সনাক্তকরণ এবং জীববৈচিত্র ও বিস্তৃতি নিরুপন।

২০১৮-২০২০

সামুদ্রিক অপ্রচলিত জলজসম্পদ সীউইডের জরিপ, চাষ প্রযুক্তি উন্নয়ন ও সীউইডজাত পণ্য তৈরি।

Development of culture of seaweeds in Bangladesh coast শীর্ষক গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগর উপকূলে সীউইড প্রজাতি সনাক্তকরণ, চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবণ এবং সীউইডজাত পণ্য তৈরির লক্ষ্যে গবেষণা পরিচালনা।

২০১৮-২০১৯

সামুদ্রিক মাছ ভেটকির প্রজনন ও পোনা উৎপাদন।

Development of breeding and culture techniques of Sea bass, Lates  calcarifer শীর্ষক গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে কক্সবাজার উপকূলে হ্যাচারিতে ভেটকি মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল উদ্ভাবনে গবেষণা পরিচালনা।

২০১৮-২০২০

সামুদ্রিক মাছ ও কাঁকড়ার প্রজনন সহায়ক লাইভ ফিড গবেষণা।

Development of culture techniques for live feed isolated from the Bay of Bengal শীর্ষক গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে হ্যাচারিতে মাছ, চিংড়ি ও কাঁকড়ার প্রজনন ও পোনা উৎপাদনে সহায়ক উপাদান হিসেবে লাইভ ফিড চাষ বিষয়ক গবেষণা পরিচালনা।

২০১৮-২০২০

সামুদ্রিক ঝিনুক ও ওয়েস্টার প্রজাতির পুষি‘ট উপাদান নিরুপন ও চাষ সম্ভব্যতা যাচাই।

Identification of mussel and snail species available in Bangladesh, Study on the nutritive value of economically important mussels and snails শীর্ষক গবেষণা প্রকল্প বাসত্মবায়নের মাধ্যমে সামুদ্রিক ঝিনুক ও ওয়েস্টার প্রজাতির পুংষ্ট উপাদান নিরুপন ও চাষ সম্ভব্যতা যাচাই।

২০১৮-২০২০

খ. মধ্য-মেয়াদী কর্ম কৌশল

ক্র নং

কার্যক্রম

কার্যক্রমের বিবরণ

বাস্তবায়ন সময়

সীউইডের চাষ প্রযুক্তি উন্নয়ন ও সীউইডের বাণিজ্যিক ব্যবহার।

Development of culture techniques of sea weeds and polyculture of sea weeds and shrimp in saline pond/ghers, Determination of nutritional and medicinal properties from sea weeds of Bangladesh coast, Studies on biologically active compounds in seaweed extracts শীর্ষক গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে নির্বাচিত সীউইড প্রজাতির টেকসই চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবংসমুদ্র ও উপকূলে প্রাপ্য ও উৎপাদিত সীউইডের বাণিজ্যিক ব্যবহার নিশ্চিতকরণ

২০১৯-২০২৩

ভেটকির ও মুলেটের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন।

গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে উপকূলীয় হ্যাচারিতে ভেটকি ও মুলেট মাছের প্রজনন ও বাণিজ্যিকভাবে পোনা উৎপাদন কৌশল উদ্ভাবনে গবেষণা পরিচালনা।

২০২০-২০২৪

সমুদ্রে ও উপকূলীয় আধা-লবণাক্ত পানিতে উপযোগী মৎস্য ও চিংড়ি প্রজাতির খাঁচায় চাষ বিষয়ক গবেষণা।

সমুদ্রে ও উপকূলে উপযুক্ত সহানে মেরিকালচার প্রযুক্তি ব্যবহার।

২০২০-২০২৪

সামুদ্রিক ঝিনুক ও ওয়েস্টার প্রজাতির প্রজনন ও চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন।

Development of breeding & seed production technology of economically important marine mussel (oyster) species,

Development of environment friendly culture technology of important marine oyster শীর্ষক গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে সামুদ্রিক ঝিনুক ও ওয়েস্টার প্রজাতির প্রজনন ও পোনা উৎপাদন বিষয়ক গবেষণা পরিচালনা।

২০২০-২০২৪

সামুদ্রিক মৎস্যজাত পণ্য তৈরি ও বিপনন বিষয়ক গবেষণা।

সামুদ্রিক মাছ ও অপ্রচলিত মৎস্যসম্পদ হতে মৎস্যজাত পণ্য তৈরি, মান নিয়ন্ত্রণ ও বিপণন বিষয়ক গবেষণা পরিচালনা।

২০২০-২০২৪

 

গ. দীর্ঘ মেয়াদী কর্ম কৌশল

ক্র নং

কার্যক্রম

কার্যক্রমের বিবরণ

বাস্তবায়ন সময়

সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনারা জন্য প্রাপ্ত সকল প্রকার মৎস্য সম্পদের ওপর গবেষণা জোরদারকরণ।

  • বঙ্গোপসাগরের মৎস্যসম্পদের মজুদ নিরুপণ ও নতুন মৎস্য ক্ষেত্র চিহ্নিতকরণ
  • Marine Protected Area বাস্তবায়ন ও সুরক্ষা করা।
  • দূষণ ও অতিআহরণ রোধে আঞ্চলিক সহযোগিতায় সামুদ্রিক ব্যবসহাপনা বিষয়ক গবেষণা পরিচালনা।

২০২৪-২০৩০

সামুদ্রিক জলজ সম্পদের সর্বত্তোম ব্যবহার নিশ্চিতকরণে বিভিন্ন জৈবিক উপাদান চিহ্নিতকরণ ও ব্যবহারে জীবপ্রযুক্তি নির্ভর গবেষণা।

সামুদ্রিক জলজ সম্পদ তথা সীউইড, মাছ ও ওয়েস্টার হতে বিভিন্ন উপকারী bio-active উপাদান সনাক্তকরণ, পৃথকিকরণ, পণ্য উৎপাদন ও সংরক্ষণে গবেষণা পরিচালনা।

 

২০২৪-২০৩০

সামুদ্রিক জলজ ও মৎস্যসম্পদ গবেষণায় দক্ষ কারিগরি জনবল ও গবেষণা অবকাঠামো তৈরি

বঙ্গোপসাগরের মৎস্যসম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন প্রেক্ষাপটে যুগোপযোগি গবেষণার জন্য দক্ষ কারিগরি জনবল ও গবেষণা অবকাঠামো (যেমন মেরিন বায়োটেকনোলজী গবেষণাগার, গবেষণা জাহাজ) সৃংষ্ট।

২০২৪-২০৩০

 

বিএফআরআই প্রকাশনা .....

 

প্রকাশনার ধরণ

সংখ্যা

নিউজলেটার

১৭ ভলিউম

জার্নাল

১৫ ভলিউম

গবেষণা প্রতিবেদন

৩৩ টি

সম্প্রসারণ পুস্তিকা ও ম্যানুয়েল

৫৫ টি

লিফলেট

৮৯ টি

প্রশিক্ষণ প্রতিবেদন

২৬ টি

কর্মশালা প্রতিবেদন

৯ টি

পোষ্টার

৯ টি

ব্রসিউর

১৬ টি

ডাইরেকটরি

৩ টি

 

বিজ্ঞানীদের পুরস্কার প্রাপ্তি .....

 

পুরস্কারের বিষয়

বছর

পদক

বিলুপ্ত প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ ও ইলিশ উৎপাদন (কওই)

২০১৮

স্বর্ণ পদক

গবেষণায় অন্যন্য অবদান (ইঅঅ)

২০১৭

স্বর্ণ পদক

টেংরা মাছের পোনা উৎপাদন

২০১৭

রৌপ পদক

রুই মাছের উন্নত জাত উদ্ভাবন

২০১০

স্বর্ণ পদক

নোনা টেংরা মাছের পোনা উৎপাদন

২০০৯

স্বর্ণ পদক

মৎস্য বিষয়ক বৈজ্ঞানিক প্রকাশনা

২০০৫

রৌপ পদক

রাঁজপুটির জাত উন্নয়ন

২০০৪

স্বর্ণ পদক

প্রযুক্তি উদ্ভাবনঃ বিপন্ন প্রজাতির মাছের প্রজনন, ধান ক্ষেতে মাছ চাষ ও ফার্মিং সিস্টেম

২০০২

স্বর্ণ পদক

রৌপ পদক

তাম্য পদক

গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন

১৯৯৭

স্বর্ণ পদক

মৎস্য বিষয়ক বৈজ্ঞানিক প্রকাশনা

১৯৯৬

স্বর্ণ পদক

রৌপ পদক

থাই পাঙ্গাস মাছের পোনা উৎপাদন

১৯৯৫

রৌপ্য পদক

 

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত প্রযুক্তিসমূহ

 

মিঠাপানির মৎস্যচাষ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রযুক্তি

 

  1. রুই জাতীয় মাছের উন্নত নার্সারী ব্যবস্থাপনাঃ মাছ চাষের জন্য ২ ধাপ পদ্ধতিতে রেণূ পোনার লালন কৌশল।
  2. কৃত্রিম প্রজননের জন্য পিটুইটারী গ্লান্ড সংগ্রহ ও সংরক্ষণঃ মাছের কৃত্রিম প্রজননে Inducing agent হিসেবে ব্যবহারের জন্য রুই জাতীয় মাছের মাথা থেকে পিটুইটারী গ্লান্ড সংগ্রহ ও সংরক্ষণ।
  3. পুকুরে রুই জাতীয় মাছের মিশ্রচাষঃ পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতির (৫-৭টি) মাছের চাষ ব্যবস্থাপনা।
  4. বিপন্ন প্রজাতির মাছের (মহাশোল, স্বরপুঁটি, গনিয়া, বাটা, গুজি, মেনি ইত্যাদি) প্রজনন ও পোনা উৎপাদন।
  5. থাই পাঙ্গাসের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন।
  6. পুকুরে পাঙ্গাস মাছের চাষঃ পুকুরে থাই পাঙ্গাস মাছের একক বা মিশ্র্রচাষ।
  7. বিএফআরআই সুপার তেলাপিয়ার পোনা উৎপাদন ও চাষঃ বিভিন্ন উৎসের তেলাপিয়া জাত থেকে নির্বাচিত পদ্ধতিতে (family selection) উন্নত জাতের তেলাপিয়া উৎপাদন।
  8. সুপার তেলাপিয়ার মনোসেক্স পোনা উৎপাদন ও চাষঃ খাদ্যের সাথে হরমোন প্রয়োগে সকল পুরুষ জাতের তেলাপিয়ার পোনা উৎপাদন ও চাষ।
  9. মৌসুমী পুকুরে রাজপুঁটির চাষ।
  10. পাবদা মাছের পোনা উৎপাদন ও চাষ।
  11. গুলশা মাছের পোনা উৎপাদন ও চাষ।
  12. মাগুর মাছের পোনা উৎপাদন ও চাষ।
  13. কৈ মাছের পোনা উৎপাদন ও চাষ।
  14. শিং মাছের পোনা উৎপাদন ও চাষ।
  15. গলদা চিংড়ির গৃহাঙ্গন হ্যাচারী মডেল ও পোনা উৎপাদনঃ বায়োফিল্টার পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ির পোনা উৎপাদন।
  16. রুই জাতীয় মাছের সাথে গলদা চিংড়ির মিশ্র চাষ।
  17. ওভার উইন্টার্ড পোনা ব্যবহারে রুই জাতীয় মাছ উৎপাদনঃ শীত সহানো মাছের পোনা ব্যবহারে কম সময়ে বড় মাছ উৎপাদন কৌশল।
  18. রুই মাছের উন্নত জাতঃ বিদ্যমান জাত হতে ১৬% বেশী উৎপাদনশীল রুই মাছের জাত উদ্ভাবন।
  19. তেলাপিয়ার উন্নত জাতঃ প্রায় ৫০%  বেশী উৎপাদনশীল তেলাপিয়া মাছের জাত উদ্ভাবন।
  20. রাজপুঁটির উন্নত জাতঃ প্রায় ৩৫%  বেশী উৎপাদনশীল রাজপুঁটির মাছের জাত উদ্ভাবন।
  21. থাই কৈ মাছের জাত উন্নয়ন।
  22. লাল তেলাপিয়ার জাত উন্নয়ন।
  23. চিতল মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন।
  24. ধান ক্ষেতে মাছের সমন্বিত চাষঃ ধান ক্ষেতে ছোট পুকুর বা নালা তৈরির মাধ্যমে মাছের চাষ পদ্ধতি।
  25. পুকুরে হাঁস ও মাছের সমন্বিত চাষ।
  26. পুকুরে মুরগী ও মাছের সমন্বিত চাষ।
  27. দেশীয় উপকরণ সহযোগে স্বল্প মূল্যের মৎস্য খাদ্য উৎপাদন।
  28. স্বল্পমূল্যের বিএফআরআই মডেল মৎস্য খাদ্যের পিলেট মেশিন তৈরী।
  29. মাছের রোগ নির্ণয়, প্রতিকার ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা।
  30. স্বাদুপানির ঝিনুকে মুক্তা চাষঃ পুকুরে চাষকৃত ঝিনুকে মেন্টাল ঢিূস্যু স্থাপনের মাধ্যমে মুক্তা উৎপাদন।
  31. বিপন্ন প্রজাতির ফলি মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
  32. কুচিয়া মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল    
  33. একোয়াপনিক গার্ডেনিংঃ  নিরাপদ মাছ ও সবজি উৎপাদন
  34. কৈ মাছের সাথে শিং ও তেলাপিয়ার মাছের মিশ্র চাষ                                                      
  35. বিপন্ন প্রজাতির টেংরা মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদন
  36. খাঁচায় মাগুর মাছের চাষাবাদ কৌশল
  37. পুকুরে তেলাপিয়ার সাথে মাগুর ও গুলশা মাছের চাষ কৌশল
  38. ভিয়েতনামী কৈ মাছের মড়ক প্রতিরোধে ভ্যাকসিন তৈরি

 

মুক্ত জলাশয়ে মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি

 

  1. ইলিশসম্পদের সংরক্ষণ ও উন্নয়ন ব্যবস্থাপনাঃ ইলিশের নার্সারী ও বিচরণক্ষেত্র চিহ্নিতকরণ, জাটকা সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা, অভায়াশ্রম প্রতিষ্ঠা এবং ইলিশ আহরণের সময় সুনির্দিষ্টকরণ।
  2. প্লাবনভূমির মৎস্যসম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনাঃ প্লাবনভুমি ও বিলে মৎস্য আহরণে ক্ষতিকর জালসমুহ চিহ্নিতকরণ, মাছের পোনা মজুদ ও অভায়াশ্রম প্রতিষ্ঠার কৌশল।
  3. জলজ পরিবেশে ও মাছের ওপর কীটনাশকের বিষক্রিয়াঃ জলজ পরিবেশে মাছের জন্য ক্ষতিকর কীটনাশক তথা রাসায়নিক দ্রব্যাদি চিহ্নিতকরণ ও ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ।
  4. পেনে মাছ চাষঃ জলাশয়ের নির্দিষ্ট অঞ্চলে জাল বা বানা স্থাপনের মাধ্যমে মাছ চাষ।
  5. পাহাড়ী ঘোনায় পেনে মাছ চাষঃ কাপ্তাই লেকে অগণিত পাহাড়ী ঘোনায় জাল বা বানা স্থাপনের মাধ্যমে মাছ চাষ।
  6. হালদা নদীর মৎস্য ক্ষেত্র চিহ্নিতকরণ ও সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনাঃ রুই জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা।
  7. ইলিশ উৎপাদনে জাটকা ও প্রজননক্ষম ইলিশ সংরক্ষণে ৬ষ্ঠ অভয়াশ্রম চিহ্নিতকরণ

 

উপকূলীয় মৎস্যচাষ ও ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি

 

  1. উন্নত পদ্ধতিতে ঘেরে বাগদা চিংড়ির চাষঃ চিংড়ি পিএল এর নার্সারী, মাটি ও পানির গূণাগূণ ব্যবষহাপনা ও খাদ্য প্রয়োগে চিংড়ির কাংখিত উৎপাদন বৃদ্ধি।
  2. কাঁকড়া ফ্যাটেনিং কৌশলঃ ছোট ছোট কাঁকড়াকে লালন ও খাদ্য প্রয়োগে বড় করে বাজারজাতকরণ কৌশল।
  3. ফসল চক্রভিত্তিক পরিবেশ বান্ধব চিংড়ি ও মাছ চাষঃ একই জলাশয়ে পর্যায়ক্রমে ধান, মাছ ও চিংড়ি চাষ।
  4. ভেটকির সাথে তেলাপিয়ার চাষঃ উপকূলীয় জলাশয়ে তেলাপিয়া চাষের সাথে ভেটকি মাছের চাষ। 
  5. রূপান্তরিত আবদ্ধ জলাশয়ে আধা-নিবিড় বাগদা চাষঃ জলাশয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কৌশল প্রয়োগে ঘেরে বাগদা চিংড়ি চাষ।
  6. ফসল চক্রভিত্তিক বাগদা ও গলদা  চিংড়ির চাষঃ একই জলাশয়ে পর্যায়ক্রমে বাগদা ও গলদা চিংড়ি চাষ।
  7. বাগদা চিংড়ির সাথে তেলাপিয়া ও রাজপুঁটির মিশ্রচাষ।
  8. গলদা চিংড়ি ও মনোসেক্স তেলাপিয়ার মিশ্রচাষ।
  9. নোনা টেংরার পোনা উৎপাদন ও চাষ।
  10. গলদা চিংড়ির আগাম ব্রুড উৎপাদনঃ গ্রীণ হাউস পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ির ব্রুড উন্নয়ন।
  11. পারশে মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন।
  12. সামুদ্রিক বা লোনাপানির মাছের পোনা উৎপাদনে লাইভ ফিড চাষ
  13. চিংড়ির রোগ সনাক্তকরণ, প্রতিকার ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা।
  14. প্রাকৃতিক উৎস হতে বাগদা চিংড়ির পোনা সংগ্রহ ও জীববৈচিত্রে ক্ষতিকর প্রভাব নির্ণয়।
  15. ‘‘বিএফআরআই মেকানিক্যাল ফিশ ড্রায়ার’’ ব্যবহারের  মাধ্যমে গুণগতমানসম্পন্ন শুটকি মাছ উৎপাদন